ছবি:সংগৃহীত
দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। ঈমান আনার পর মুমিনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো নামাজ পড়া। ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, সময়মতো নামাজ পড়তেই হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘…নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)
নামাজ পড়ার নিয়ম-কানুন রয়েছে। নিজের ইচ্ছামাফিক রুকু-সেজদা দিলেই নামাজ আদায় হয় না। নিয়ত, এরপর তাকবিরে তাহরিমা থেকে শুরু করে সালাম ফেরানো পর্যন্ত নামাজের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে।
নামাজের জন্য নিয়ত জরুরি। অন্যথায় নামাজ শুদ্ধ হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى ‘আমলসমূহ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে।’ (সহিহ বুখারি: ১) কাজেই নামাজের শুরুতে নিয়ত করা জরুরি।
তবে আরবিতে নিয়ত করা কিংবা মুখে উচ্চারণসহ নিয়ত করা জরুরি নয়। কেননা নিয়তের সম্পর্ক অন্তরের সঙ্গে। অন্তরের সংকল্পকেই নিয়ত বলা হয়। তাই অন্তরে নামাজের বিষয়টি থাকলেই নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
এরপরও কেউ যদি মুখে উচ্চারণসহ নিয়ত করে বা আরবিতে নিয়ত করে তাহলেও নিয়ত শুদ্ধ হবে। (আল বাহরুর রায়েক: ১/৪৮৩)
যদি কেউ নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ ছাড়া মন স্থির করতে না পারেন, তাহলে তিনি নিয়তের শব্দগুলো মুখে উচ্চারণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে নিজ ভাষায় উচ্চারণই যথেষ্ট, লম্বা-চওড়া আরবি বাক্য আওড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। (ফাতহুল কাদির: ১/২৬৬)
তাকবিরে তাহরিমার আগে নিয়ত করতে হবে, তাকবিরের পর নিয়ত করলে সহিহ হবে না। (রদ্দুল মুহতার: ১/৪৪৮)। তবে আগে নিয়ত করার পর তাকবিরে তাহরিমার মুহূর্তে অন্তরে ওই নিয়ত বিদ্যমান থাকা উত্তম, যদিও জরুরি নয়।
এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবে এসেছে, নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার পর যে ব্যক্তি অজু করে ওই নামাজের নিয়ত করে মসজিদের দিকে রওনা হলো এবং মাঝে অন্যকোনো কাজে লিপ্ত হয়নি, তার ওই নিয়তই যথেষ্ট। তাকবিরে তাহরিমার সময় আবার নিয়ত করা শর্ত নয়, যদিও তখনও নিয়ত অন্তরে বিদ্যমান থাকা উত্তম। (বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৯৩)
নামাজের রাকাতসংখ্যা নিয়তের সময় নির্ধারণ করা জরুরি নয়। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল সব নামাজের একই হুকুম। তবে ফরজ-ওয়াজিবের মধ্যে তার স্বতন্ত্র নিয়ত অর্থাৎ প্রকার ও ওয়াক্তের নিয়ত করতে হবে। আর সুন্নত ও নফলে শুধু নামাজের নিয়তই যথেষ্ট, প্রকার নির্ধারণ জরুরি নয়। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/৪১৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নমাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সকল মাসয়ালা জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম